পুলক কুমার দে, রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
দেশব্যাপী সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, উপাসনালয়, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় বক্তারা বলেন- যখনই দেশে কোনও পালাবদল শুরু হয় তখনই মৌলবাদী গোষ্ঠীর হাতে সংখ্যালঘুরা হামলার শিকার হয় । ১৯৭১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে যেসব সংখ্যালঘু নিপীড়ন, হত্যা হয়েছে তার কোনও বিচার না হওয়ায় বারবার একটি গোষ্ঠী সনাতনীদের ওপর হামলার সাহস দেখাচ্ছে। বক্তারা আরোও বলেন- একটি গোষ্ঠী চায় এদেশ থেকে সনাতনীরা চলে যাক। সনাতনীদের শূন্য করার নীলনকশা নিয়ে তারা কাজ করছে। কিন্তু এদেশ ছেড়ে কোনও সনাতনী কোথাও যাবে না বলেও শপথ করেন বক্তারা।
এসময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিচারসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক মিশু দে। দাবিগুলো হল-সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন, ক্ষতিগ্রস্থতে ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করা, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টগুলোকে ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ। দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ। সাংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন, শারদীয় দূর্গাপূজায় ৫দিন সরকারি ছুটি দেওয়ার দাবি করা হয়। এছাড়াও পার্বত্যাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এ হিন্দু সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে আইন পাশের দাবিও জানানো হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজিত শীল, রাজু শীলসহ রাধা রাসবিহারী মন্দিরের অধ্যক্ষ নিতাই নুপুর দাস ব্রহ্মচারী। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জনস্রোতে এই প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালিন সময়ে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘন্টাব্যাপী যানচলাচল বন্ধ ছিল।
Leave a Reply